২০২২ সালে হযরত নাসিম শাহ আউলিয়া ওরফে গঙ্গাজলের মাজারের খাদেম মো: শামসুল আলম বৈদ্যুতিক খুটিসহ বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্যে আবেদন করেন স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে।
আবেদনের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের নানান তালবাহানায় মিলছে না বৈদ্যুতিক সংযোগ। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির কমলপুর ও দেবীপুর ঘেষা ঐতিহ্যবাহী নাসিম শাহ আউলিয়া ওরফে গঙ্গাজলের মাজারে দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যুতিক সংযোগ না পাওয়ায় মাজারের ভক্তবৃন্দ ও এলাকাবাসী তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ জানিয়েছেন।
মাজারের খাদেম শামসুল আলম জানান, আমরা প্রথম ২০২২ সালে এবং দ্বিতীয় দফায় পুনরায় ২o২৩ সালের জুলাই মাসে আবেদন করি। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে হয়রানির শিকার হয়েছি। মাজারের বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছে না। আসছে সামনে বাৎসরিক ঔরস মাহফিলে মাজারে বিদ্যুৎ সংযোগ পাব কি না তা সন্ধিহান।
পল্লী বিদ্যুতের অফিসাররা একজন অন্য জনের উপর দায় চাপাচ্ছেন। ফলে পাশের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও মাজারে জ্বলছে না বৈদ্যুতিক আলো। আমরা মাজারের বিভিন্ন কর্মকান্ড ও জিয়ারত পরিচালনায় ক্রমাগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।
তথ্যমতে, ঐতিহ্যবাহী গঙ্গাজলের মাজারটি ধর্মীয়ভাবে ওই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জায়গাটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন।স্থানীয় ইউএনও জেলা প্রশাসকের কাছে এটি ও এর আশপাশের ঐতিহ্য ও নিদর্শন সংরক্ষনের জন্যে প্রতিবেদন দিয়েছেন। সম্প্রতি স্থানীয় এক সাংবাদিকের উদ্যোগে মাজার ও এর পুকুর থেকে সংগ্রহীত হাজার বছরের পুরনো প্রত্নবস্তু কুমিল্লা ময়নামতি জাদুঘরে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
যুগ যুগ ধরে এলাকাবাসী ওই মাজারটিকে পবিত্র স্থান হিসাবে মান্য করে আসছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় মাজারটির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় ও আগামীর বাৎসরিক ওরস মাহফিল পালন নিয়ে সংকুচ দেখা দিয়েছে।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নোয়াপাড়া জোনাল অফিদের ডিজিএম পারভেজ ভূঁইয়া জানান, আমরা সংযোগ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি দেওয়ার জন্য হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অনেক আগেই প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি এখন সেখান থেকে টেন্ডার হয়ে খুটি আরো আগে হয়ে যাওয়ার কথা। আমাদের কোন দায় আর নেই।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এজিএম শফিকুল ইসলাম জানান, নোয়াপাড়া জোনাল অফিস থেকে আমাদের কাছে আবেদনের চিঠি এসে পৌঁছায়নি। জোনাল অফিস যদি আমাদের কাছে পত্র পৌঁছিয়ে না দেয় তবে আমাদের কিছু করার থাকে না। তবে মাজারের সংযোগটিকে দ্রুত করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
এদিকে এলাকার সচেতন মহলের দাবি, পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের ঘূষ বাণিজ্য ও অফিসের কর্মকর্তাদের পরস্পারিক দোষারোপ বন্ধ করে অনতিবিলম্বে ঐতিহ্যবাহী মাজারের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া। যার মাধ্যমে স্থানীয় দীর্ঘদিনের প্রানের দাবি পূরণ হবে।
Leave a Reply