1. admin@hvoice24.com : admin :
বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার’ লুন্ঠনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন

হবিগঞ্জ ভয়েস ২৪ ডেস্ক :
  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২
  • ৯৩ বার পঠিত

ফুলের তোড়া দিয়ে নারী নেত্রীকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুন্ঠনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই গাজীপুর জেলা।

গাজীপুর কোনাবাড়ী থানার মহিলা আওয়ামী লীগের থানা কমিটির আহ্বায়ক হাজেরা বেগম এর বাসায় লুণ্ঠন মামলার ঘটনা উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করল পিবিআই গাজীপুর।

মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী ১। মোঃ সোহেল (৩৪), পিতা-মোঃ জিন্নত আলী, সাং-নতুন বাজার, থানা-কোনাবাড়ী, জিএমপি গাজীপুরকে ০৬/০৭/২০২২ খ্রিঃ রাত ১১.০০ ঘটিকায় জিএমপি গাজীপুর কোনাবাড়ী থানাধীন দেউলিয়াবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং গত ১৮/০৭/২০২২ খ্রিঃ ০২ (দুই) দিনের রিমান্ডে আনা হয়। আসামী ২। শ্রী সাজন (২৮), পিতা-মৃত হিরা লাল, ,সাং-কোনাবাড়ী নতুন বাজার, থানা-কোনাবাড়ী, জিএমপি গাজীপুরকে, ২০/০৭/২০২২ খ্রিঃ তারিখ ভোর সাড়ে৫ ঘটিকায় জিএমপি গাজীপুর কোনাবাড়ী থানাধীন’ নতুন বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

অত্র মামলার বাদীনি হাজেরা বেগম, কোনাবাড়ী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। গত ২৮/১১/২০২০ খ্রিঃ সকাল অনুমান সড়ে ১১টায় তিনি বাসায় অবস্থান করছিলেন। এমন সময় তার বাড়ীর গেইটে ০৪ জন মাস্ক পড়া লোক ফুলের তোড়াসহ বাদীনিকে ডাকাডাকি করে। তিনি এগিয়ে এসে গেইট খুলে জিজ্ঞাসা করেন ‘আপনারা কারা, আসামীরা বলেন আমরা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের লোক, করোনা সম্পর্কে এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনার সাক্ষাতকার নেওয়ার জন্য এসেছি’। বাদীনি তাদেরকে বাসায় প্রবেশ করতে দেয়। আসামীরা বাদীনির কক্ষে প্রবেশ করে একজন আসামী তার নিকটে থাকা একটি পিস্তল বের করে বাদীনিকে ভয় দেখায়। আসামীরা বাদীনির হাত পা বেঁধে বাদীনির নিকট থেকে আলমারির চাবি নিয়ে আলমারি থেকে নগদ ৩,০০,০০০/-(তিন লক্ষ) টাকা ও ৮.৫ (সাড়ে আট ভরি) স্বর্ণ অলংকার লুট করে নিয়ে যায়। এই সংক্রান্তে বাদীনি হাজেরা বেগম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় এজাহার দায়ের করলে কোনাবাড়ী থানার মামলা নং-১৮ তারিখ-২৮/১১/২০২০ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

মামলাটি জিএমপি কোনাবাড়ী থানা পুলিশ প্রায় ০৭ মাস তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় এবং তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার মাধ্যমে পিবিআই গাজীপুর জেলায় পরবর্তী তদন্তের জন্য প্রেরণ করে।

অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপারেরএর সার্বিক সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ জাহিদুল হক মামলাটি তদন্ত করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ সোহেল (৩৪), পিতা-মোঃ জিন্নত আলী, সাং-নতুন বাজার, থানা-কোনাবাড়ী, জিএমপি গাজীপুর এর কোনাবাড়ীতে একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে। ওয়ার্কশপ ব্যবসার সুবাদে এবং একই এলাকায় আসামী ২। শ্রী সাজন (২৮), পিতা-মৃত হিরা লাল, সাং-কোনাবাড়ী নতুন বাজার, থানা-কোনাবাড়ী, জিএমপি গাজীপুর এর বাড়ী থাকায় উভয়ের মধ্যে পরিচয় ও ঘনিষ্টতা তৈরী হয়। এছাড়াও অত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত সহযোগী আসামীদের সাথে সোহেলের ঘনিষ্টতা তৈরী হয়। কোনাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় সকলে একত্রিত হয়ে তারা আড্ডা দিতো। এ মামলার ঘটনার আগের দিন গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় সহ সহযোগী আসামীগণ একত্রিত হয়ে কোনাবাড়ীস্থ মহিলা আওয়ামীলীগের আহবাহয়ক মিসেস হাজেরা বেগম এর বাসায় থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুন্ঠন করার জন্য কিভাবে নেত্রীর বাসায় প্রবেশ করবে তার পরিকল্পনা করে। ঘটনার অল্প কিছুদিন পূর্বে মামলার বাদীনি মহিলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন এবং তিনি করোনা মহামারির সময় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেহেতু ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানানো এবং সাংবাদিক সেজে সাক্ষাতকার গ্রহণের পরিকল্পনা করে নিকটবর্তী একটি ফুলের দোকান থেকে ফুলের তোড়া কিনে বাদীনির বাসায় যায়। আসামীগণ নেত্রীর বাসার ভিতরে প্রবেশ করার জন্য বাসার গেইটের কড়া নাড়লে বাদীনি তাদের পরিচয় জানতে চায়। করোনায় সামাজিক কর্মকান্ডে বাদীনির অবদান সম্পর্কে সাক্ষাতকার এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য এসেছেন বলে আসামীগণ জানায়। বাদীনি সরল-বিশ্বাসে তার ঘরের দরজা খুলে দিলে আসামীদের মধ্যে ০৩ জন ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে একজন বাহিরে পাহাড়া দিতে থাকে। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে আসামীগণ বাদীনিকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। কথোপকথনের একপর্যায়ে আসামীদের মধ্যে থেকে একজন কোমর থেকে পিস্তল বের করে বাদীনিকে ভয় দেখায় এবং অন্যান্য আসামীগণ বাদীনির হাত-পা বেঁধে বাসা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুন্ঠন করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে লুন্ঠিত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত লুন্ঠনের ঘটনা। মামলার বাদীনি কোনাবাড়ী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এর বাসা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার লুট করার পরিকল্পনা করে ফুলের তোড়া নিয়ে অভিনন্দন জানানোর কৌশলে বাসায় প্রবেশ করে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে বাদীনির হাত-পা বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার লুট করে নিয়ে যায়।

পিবিআই এর হেফাজতে থাকা অবস্থায় আসামী মোঃ সোহেল ও শ্রী সাজনদ্বয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ কালে তারা ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে। ২০/০৭/২০২২ খ্রিঃ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামীদ্বয় নিজেদেরকে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপরাপর আসামীদের নাম উল্লেখ করে বাদীনির (কোনাবাড়ী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক) বাসায় ফুলের তোড়া নিয়ে প্রবেশ করে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে বাদীনির হাত-পা বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার লুট করে নিয়ে যায় এবং অন্যান্য আসামীদের কার কি ভূমিকা ছিল বিস্তারিত বর্ণনা করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা