1. admin@hvoice24.com : admin :
বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন

নিশ্চিতভাবে একদিন স্রষ্টার সম্মুখে উপস্থিত হতে হবে!

সম্পাদকীয়
  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৫২ বার পঠিত

“১৫ই রমজান কিয়ামত” এর বিষয়টি অনেকেই বিশ্বাস করেছিলেন। তবে আমার আলোচনার প্রসঙ্গটা বিশ্বাস, ধর্মান্ধতা বা ঠিক-বেঠিকের নয়, প্রসঙ্গটা হল- এই যে যারা বিশ্বাস করেছিলেন ১৫ রমজান কিয়ামত হবে বা বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ হবে, তাদের মধ্যে ১জনও কি এমন আছেন যিনি কিনা গত কয়েকদিন দুনিয়াবি সব চিন্তা থেকে মুক্ত থেকে শুধুমাত্র পরকালের কথা ভেবেছেন? এমন একজনও কি আছেন যে, পাড়া-প্রতিবেশি বা যাদের সাথে অন্যায় করেছেন তাদের নিকট নিজের ভুলের ক্ষমা চেয়েছেন? নিজের সমস্ত ধন-সম্পদ দান করে দিয়েছেন? একজনও কি আছেন যে কিনা নিজের অহংকারকে একেবারে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে প্রভুর সাক্ষাতের অপেক্ষা করেছেন? আমার জানা নেই এমন কারো ব্যাপারে। জানার প্রয়োজনও নেই। কিন্তু নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি নিশ্চিত কিয়ামত হবে জেনেও নিজেকে পরিবর্তন করতে পেরেছেন কিনা?

যতটুকু বুঝতে পেরেছি মানুষকে দেখে, তাতে আমার মনে হয়নি এই ১৫ রমজানের কিয়ামতকে কেন্দ্র করে একজনও পরিবর্তন হতে পেরেছিল । অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে, কিয়ামতের প্রতি বিশ্বাস থাকা স্বত্ত্বেও মানবজাতি পাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না। আমিত্বের মধ্যেই ডুবে থাকে। অনেকেই যারা নিজেদের মুমিন বা ইমানদার দাবি করে থাকেন, তারা কি আদও মুমিন! সত্যিই কি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ইমান আছে তাদের! ১৫ই রমজান চলে গেল, কিয়ামত হয়তো হয়নি, কিন্তু আপনি কি নিজের ইমান ও আমলের দুর্বল দিকটা বুঝতে পেরেছেন এখন? যেখানে নিশ্চিত কিয়ামত জানার পরও নিজেকে শুধরাতে পারেন নাই, সেখানে যখন কিয়ামত হল না, কবে হবে তারও ঠিক নেই, তখন কি আর নিজেকে পরিবর্তন করার সুযোগকে কাজে লাগাতে মনে চাইবে আপনার? নিজেকে প্রশ্ন করুন, জবাব খুঁজুন।

এবার আসি তাদের প্রসঙ্গে- যারা ধর্মান্ধ জাহেল নন বলেই ১৫ রমজানকে কিয়ামত ভাবেন নাই। আচ্ছা, যদি সত্যিই আজ কিয়ামত হতো, আপনি আপনার রবের সামনে কি পূণ্য বা সৎকর্ম নিয়ে দাঁড়াতেন? আপনার কর্মের থলি কি প্রভুর পছন্দনীয় কর্ম দ্বারা আজ পূর্ণ ছিল? আপনি কি প্রভুর সামনে লজ্জিত হওয়ার মত কোনো কর্ম করেন নাই? তথাকথিত কিয়ামত হোক বা না হোক, কিন্তু মৃত্যুকেও কি আপনারা অস্বীকার করবেন? মৃত্যুর প্রতি কি আপনার ঈমান বা বিশ্বাস নেই? নাকি আপনি মনে করেন যে, ১৫ই রমজানের কিয়ামত স্থগিত হওয়ার মত আপনার মৃত্যুও স্থগিত হয়ে যাবে? আপনি কি জানেন আপনি আর কতক্ষন বা কতদিন জীবিত থাকবেন? যদি মৃত্যু নিশ্চিত বিষয় হয়, একদিন আপনার ধ্বংস অবধারিত থাকে এবং আপনি সেই দিন-ক্ষণ সম্পর্কে অবগত নন, তাহলে আপনি কিভাবে এতো নিশ্চিন্ত হয়ে আনন্দ করছেন? পৃথিবী হয়তো আজ ধ্বংস হয়নি, কিন্তু আজ কি আপনার মত কেউ মৃত্যু বরণ করেন নাই? কেউ কি আজ ধ্বংস হয়ে প্রকৃতিতে বিলীন হয়নি? তবে আপনি কি করে এতো নিশ্চিন্তে ছিলেন যে, আজ কিয়ামত না হলেও আপনি জীবিত থাকবেন? কিয়ামত না হোক, আপনার মৃত্যু ত আজ হতেই পারতো। আপনি কি নিজেকে পরিবর্তন করেছেন এখনও? প্রভুর সামনে আজ দাঁড়াতে হলে আপনি কি নিয়ে দাঁড়াবেন? নিজেকে প্রশ্ন করুন, জবাব খুঁজুন, নিজের কৃতকর্মের ব্যাপারে ভাবুন।

একজন মানুষের জন্য মৃত্যুর চেয়ে বড় কিয়ামত আর কি হতে পারে? যদি ব্যক্তির মৃত্যুই হয়, তখন এই পৃথিবী ধ্বংস হলেই তার কি আর না ধ্বংস হলেই তার কি? মৃত্যুর সাথে তার আপন এই দেহের কিয়ামত বা ধ্বংস তো হয়েই যাচ্ছে। তবে নিজেকে পরিবর্তনের জন্য কিয়ামতের জন্যেই কেন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, নিজের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষাই কি যথেষ্ট নয়?

হে দয়াময় প্রভু! আপনি আমাদের সবাইকে নিজেদের কৃতকর্মের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার মানসিকতা দান করুন, সেই সাথে মৃত্যু নামক কিয়ামত যে আমাদের সবার জীবনে হঠাৎ চলে আসতে পারে এবং আমাদের নিশ্চিতভাবে একদিন আপনার সম্মুখে উপস্থিত হতে হবে নিজদের কৃতকর্মকে সাথে নিয়ে, সেই বোধ আমাদের হৃদয়ে জাগ্রত করে দিন, যেন আমরা অহংকার ও পাপাচার থেকে নিজদের দূরে রাখতে পারি। হে পরম করুনাময়! আপনি করুনা না করলে আমরা সারাজীবনই পথভ্রষ্ট থেকে যাবো, আপনি আমাদের সেই পথে পরিচালিত করুন যে পথে পরিচালিত হলে আপনার সামনে আমাদের সেদিন লজ্জিত না হতে হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা