যশোর মনিরামপুরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় দুদিন ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। আবার শুরু হয়েছে টানা তাপদাহ। এতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে মৌসুমি ফলের ওপর। আম-লিচুর একাংশ ঝরে পড়ে ফেটে যাচ্ছে।মনিরামপুরের অনেক এলাকাতে প্রচুর পরিমানে আম এবং লিচু ঝরে পড়েছে।আর যেগুলো ভালো আছে সেগুলোও আকারে বাড়ছে না।
মনিরামপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্য ও ছবিতে এই চিত্র ফুটে উঠেছে। চাষিরা বলছেন, এর আগে প্রচন্ড তাপদাহ ও ঝড়-বৃষ্টিতে ৪০ শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে। তাপদাহ আরো চলতে থাকলে মোট ফলনের অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।খামারবাড়ি, খানপুর এবং মাছনা,জয়পুর গ্রামের আম চাষিরা বলছেন, শুরুতে বাগানে আমের গুটি দেখে চাষিরা বাম্পার ফলনের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের লম্বা খরায় তাঁদের সেই স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে। কেননা দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা ঝড়-বৃষ্টি হলেও মনিরামপুরে এখনো পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি হয়নি। এর ফলে মাটিতে কোনো ধরনের রস না থাকায় গাছ থেকে আম ঝরে পড়ছে। সামনে আরো কিছুদিন বৃষ্টি না হলে আম ঝরে পড়ার হার বাড়বে।তবে দুদিন আগে ঝড় বৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টিতে উপকার হলেও প্রচন্ড ঝড়ে আম এবং লিচু ঝরে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিতু রাজ সরকার জানান, চলতি লম্বা খরা অব্যাহত থাকলে ফলনে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটতে পারে। চলতি বছরে এই উপজেলায় প্রায় ২হাজার হেক্টর জমিতে আম এবং লিচু চাষ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ হাজার টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে এই উপজেলায়।
মাছনা গ্রামের আম এবং লিচু চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন এবার আশা ছিল আম এবং লিচুর অনেক ফলন হবে, কিন্তু টানা গরমের কারণে আম এবং লিচুর গুটি অবস্থায় প্রচুর গুটি ঝরে পড়েছে। এখন আম এবং লিচু পাকতে শুরু করেছে, কিন্তু বৃষ্টি না থাকায় এবং গরমে সেই আমও ফেটে যাচ্ছে এবং আকারে ছোট হচ্ছে।কিন্তুু গত পরপর দুদিন হঠাৎ প্রচন্ড ঝড়ে আমার গাছের অনেক আম এবং লিচু ঝরে পড়েছে।
খানপুর গ্রামের লিচু চাষী হাদিউজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘গরমে লিচু গাছে থাকা অবস্হায় ফেটে যাচ্ছে। এবার তেমন বৃষ্টি না থাকায় লিচুর আকারও ছোট হয়েছে। লিচু বাঁচাতে বাগানে সেচ দিতে হচ্ছে। কিন্তু এক দিন সেচ দিলে দুই দিন পরই রোদে মাটি ফেটে যাচ্ছে। গ্রামে তেমন বিদ্যুৎও থাকছে না। ফলে সেচ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। খানপুর ইউনিয়নের উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রুবিনা আকতার বলেন ভালো জাতের আমের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। ঝড় না হলে আম ঝরে পড়ার আর কোনো সুযোগ নেই। তবে পানির অভাব দূর করতে গাছে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। একইভাবে লিচুর ক্ষেত্রেও পানি সেচ দিতে হবে। তাহলে লিচু ফাটা থেকে রক্ষা করা যাবে। তবে পরপর দুদিন সন্ধ্যার পরে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টিতে অনেক আম এবং লিচু ঝরে পড়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।কিন্তু বৃষ্টিতে আবহাওয়া ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে জন জীবনে।
Leave a Reply