হবিগঞ্জ ড্রেস পরিধান না করে বোরকা পরে স্কুলে আসায় ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে স্কুলের শিক্ষীকা মৌসুমী রায় পায়ে সেজদা দিয়ে নাকে খত দিতে বাধ্য করার অভিযোগে সংবাদটির বিষয়ে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে শিক্ষীকাকে স্হায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।’
আজ ০১ আগস্ট হবিগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক জনাব ইশরাত জাহান; পুলিশ সুপার জনাব এস এম মুরাদ আলি; উপ-পরিচালক, এনএসআই জনাব আজমূল হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
এসময় তারা প্রএধান শিক্ষিকাসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্রীদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক তার সভাকক্ষে হবিগঞ্জ জেলার সম্মানিত উলামা কেরামের সাথে এক জরুরি সভা আহবান করেন। উক্ত সভায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করে সকলকে ধৈর্য্য ধারন করে সহনশীল আচরণ করার অনুরোধ জাীনানো হয় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহবান করা হয়।
বিকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে এক জরুরি মতবিনিময় সভায় মিলিত হন সম্মানিত জেলা প্রশাসক। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে- ঐবিষয়টি যেহেতু আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সেহেতু সংবেদনশীল এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন স্ট্যাটাস বা বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সাদিয়া আক্তার নামে ওই ছাত্রী স্কুলের ড্রেস না পরে বোরকা পরিধান করে স্কুলে যান। এসময় বিষয়টি শিক্ষিকা মৌসুমী রায়ের নজরে আসলে তিনি ওই ছাত্রীকে ড্রেস না পরে আসার কারণে শাস্তি প্রদান করেন। স্কুল ছাত্রীর দাবী, বোরকা পরে স্কুলে আসায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি ওই ছাত্রীর পরিবার থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনাটি ঘটলেও পরদিন শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ হওয়ায় শনিবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন ওই স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ। আলোচনা শেষে তারা ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করেন এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেয়া হয়।
শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার জানান- স্কুল ড্রেস না এনে বোরকা পড়ে স্কুলে আসায় শিক্ষিকা মৌসুমি রায় উনার পায়ের কাছে সেজদা দিয়ে নাকে খত দিতে বলেন কিন্তু সাদিয়া শিক্ষিকা মৌসুমি রায়কে কেঁদে কেঁদে অন্য শান্তি দেওয়ার কথা বল্লেও তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে বলেন আমি যা বলেছি তুমাকে তাই করতে হবে। এক পর্যায়ে সাদিয়াকে তা করতে বাধ্য করেন ওই শিক্ষিকা এবং অন্য শিক্ষার্থীদেরকে এব্যাপারে কোন রকম উস্কানি দিলে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এদিকে এ ঘটনায় রবিবার পুরো জেলাজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় বইছে। নেটিজেনরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হলে ওই শিক্ষিকার অপসারন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছেন।
Leave a Reply